মাথাব্যথা কেন হয়? কারন, লক্ষণ ও প্রতিকার।
মাথাব্যথার প্রধান কারণগুলো কি কি? চিকিৎসাশাস্ত্র কি বলে???
পেজ সূচিপত্র ঃ মাথাব্যথা কেন হয়? কারন, লক্ষণ ও প্রতিকার।
১. টেনশন হেডেক (Tension headache)
-
মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা
-
ঘুমের অভাব বা অনিয়মিত ঘুম
-
দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার/মোবাইল ব্যবহার
-
ভুল ভঙ্গিতে বসা বা ঘাড়ের উপর চাপ
-
কাজের চাপ বা পারিবারিক টেনশন
-
চোখের চাপ (Eye strain)
- নিয়মিত ঘুম: প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
- মনকে শান্ত রাখুন: স্ট্রেস কমাতে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা দম নিয়ন্ত্রণ অনুশীলন করুন।
- সঠিক ভঙ্গিতে বসুন: কাজের সময় সোজা হয়ে বসুন, ঘাড় বা কাঁধে যেন চাপ না পড়ে।
- স্ক্রিন টাইম কমান: একটানা মোবাইল বা কম্পিউটারে কাজ না করে মাঝে মাঝে চোখ ও শরীরকে বিশ্রাম দিন।
- পানি ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন: হালকা, পরিমিত খাবার ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
২. মাইগ্রেন (Migraine) এর কারনে মাথাব্যাথা
মাইগ্রেন কী?
মাইগ্রেন একটি নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার, যার প্রধান লক্ষণ হলো তীব্র মাথাব্যথা, সাধারণত মাথার এক পাশে হয়। এটি কয়েক ঘন্টা থেকে শুরু করে কয়েকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। অনেক সময় মাইগ্রেনের আগে বা সঙ্গে দৃষ্টি বিভ্রম (aura), বমি ভাব, আলো-আবেগ ও শব্দ সহ্য করতে না পারা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।
মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথার লক্ষণসমূহ
স্পন্দনশীল ব্যথা---মাথার এক পাশে বা মাঝে মাঝে দুই পাশে ধাক্কা মারছে এমন অনুভব |
চোখে ঝাপসা / আভা দেখা--কিছু ক্ষেত্রে চোখে আলো ঝলসানো, রেখা বা দৃষ্টির বিকৃতি হয়
বমি ভাব / বমি--অনেক সময় মাথাব্যথার সঙ্গে বমির প্রবণতা দেখা দেয়
দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন--মাথাব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে
- মানসিক চাপ-দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, অতিরিক্ত চিন্তা
- ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত ঘুম--ঘুমের রুটিন পরিবর্তন
- নির্দিষ্ট খাবার--চকোলেট, চীজ, ক্যাফেইন, ফাস্ট ফুড, প্রিজারভেটিভযুক্ত খাবার
- হরমোন পরিবর্তন--নারীদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাবের সময় মাইগ্রেন বেড়ে যায়
- পরিবেশগত কারণ--উজ্জ্বল আলো, তীব্র গন্ধ, উচ্চ শব্দ
- অতিরিক্ত মোবাইল/কম্পিউটার ব্যবহার--চোখের চাপ ও মস্তিষ্কের অতিরিক্ত উত্তেজনা
প্রতিরোধের উপায়
-
পর্যাপ্ত ও নিয়মিত ঘুম
-
মানসিক চাপ কমানো (মেডিটেশন, ইয়োগা)
-
নির্দিষ্ট খাবার ও পানীয় এড়ানো
-
দিনে পর্যাপ্ত পানি পান
-
মোবাইল ও স্ক্রিন টাইম কমানো
-
ডায়েরি করে ট্রিগার শনাক্ত করা
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
-
প্রতি মাসে একাধিকবার মাইগ্রেন হয়
-
প্রতিটি অ্যাটাক কয়েকদিন স্থায়ী হয়
-
ব্যথা অস্বাভাবিক রকম তীব্র বা নতুন ধরনের
-
ব্যথার সঙ্গে অবসাদ, দুর্বলতা বা অজ্ঞান হওয়ার প্রবণতা থাকে
৩. ক্লাস্টার হেডেক (Cluster headache)
লক্ষণসমূহ (Symptoms)
-
ব্যথা সাধারণত মাথার একপাশে (প্রায় সব সময় একই পাশে)
-
চোখ লাল হয়ে পানি পড়া
-
নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা নাক দিয়ে পানি পড়া
-
চোখের পাতায় ঝুলে পড়া (ptosis)
-
চোখ ফোলানো (swelling)
-
অস্থিরতা বা চলাফেরার প্রবণতা ব্যথার সময়
-
রাতে ঘুমের সময় হঠাৎ ব্যথা শুরু হওয়া (midnight attack)
৪. সাইনাস জনিত মাথাব্যথা
৫. চোখের সমস্যাজনিত ব্যথা
৬. উচ্চ রক্তচাপ (Hypertension)
৭. অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা ক্যাফেইন ছাড়া
৮. ডিহাইড্রেশন বা পানি স্বল্পতা
৯. ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত ঘুম
১০. দেহের পুষ্টির ঘাটতি
- হঠাৎ করে খুব তীব্র মাথাব্যথা শুরু হওয়া
- মাথাব্যথার সঙ্গে চোখে ঝাপসা দেখা বা চোখের সমস্যা
- কথা বলতে অসুবিধা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
- শরীরের কোনো এক পাশ অবশ হওয়া বা দুর্বলতা
- মাথায় আঘাত পাওয়ার পর শুরু হওয়া ব্যথা
- জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বমি ইত্যাদি
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
- প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান
- স্ক্রিন টাইম কমান ও চোখের সুরক্ষা নিন
- ক্যাফেইন ও প্রসেসড খাবার কম খান
- স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন বা হালকা ব্যায়াম করুন
- চোখের সমস্যা থাকলে নিয়মিত চেকআপ করুন
- নিয়মিত সময়মতো খাবার খান
মেডিজেনিক এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url