কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর এন্টিবায়োটিক

 আপনি যদি কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। ঘরে বসে কাজ করছেন, হঠাৎ ছুরি বা কাঁচের আঘাতে আঙুল কেটে গেল! কী করবেন তখন? আতঙ্কিত হবেন না। বরং সঠিকভাবে কিছু ধাপ অনুসরণ করলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।

আজকের এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন শরীরের কোথাও কেটে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে কি করবেন, কিভাবে বড় ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবেন সাথে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এন্টিবায়োটিক ওষুধ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। 

পেজ সুচিপত্রঃ কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর এন্টিবায়োটিক 

 কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর এন্টিবায়োটিক

কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর এন্টিবায়োটিক ওষুধ কখন এবং কেন ব্যবহার করা হয় চলুন সেই সম্পর্কে জেনে নেই। প্রায়শই বাসা বাড়িতে কাজ করার সময় আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গা কেটে যায় বা ক্ষতের সৃষ্টি হয়। অনেকসময় আমরা এটিকে অবহেলা করে ফেলি। ফলস্বরূপ ছোটো ক্ষত বা কাটা থেকে বড় ধরনের সংক্রমণের সৃষ্টি হয় একই সাথে টিটেনাজ এর মতো প্রাণঘাতী রোগেরও সৃষ্টি হতে পারে। তাই সংক্রমণ এড়াতে তাৎক্ষনিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

আজকে আমরা এমন কিছু এন্টিবায়োটিক ওষুধ সম্পর্কে জানব যেগুলো কাটা ক্ষত দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ থেকেও রক্ষা করে। তবে সংক্রমণ এড়াতে আমাদের যে বিষয়টি সর্বপ্রথম জানতে হবে সেটি হচ্ছে প্রাথমিক চিকিৎসা। এন্টিবায়োটিক সেবনের পূর্বে আমাদের প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই পোস্টে এমনই কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ধারণা দিবো যেগুলা আপনি তাৎক্ষনিক বাসায় বসেই করতে পারবেন।

তাৎক্ষনিক যে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করবেন 

হাত ধুয়ে নিনঃ কোনো ধরনের চিকিৎসা শুরু করার আগে নিজের হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন। কোনোভাবেই অপরিষ্কার হাত দিয়ে ক্ষতস্থান স্পর্শ করবেন না। কারণ হাতে থাকা জীবাণু কাটা জায়গায় গেলে ইনফেকশন হতে পারে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে এবং পরিষ্কার শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। 

রক্তপাত বন্ধ করুনঃ রক্তপাত বন্ধ করতে পরিষ্কার গজ বা কাপড় দিয়ে কাটা জায়গায় হালকা চাপ দিন।  কমপক্ষে ৫-১০ মিনিট ধরে রাখুন। কাটা জায়গাটি যদি হাত বা পায়ে হয়, তাহলে উঁচু করে রাখলে রক্তপাত কমে। এক্ষেত্রে তুলা বা এধরনের কাপড় ব্যবহার করবেন না। কারন তুলার ফাইবার ক্ষত স্থানে লেগে থাকলে সমস্যা হতে পারে। 

ক্ষতস্থান পরিস্কার করুনঃ রক্তপাত কমে গেলে কাটা অংশ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চাইলে ফুটানো ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে পারেন। পানিতে অল্প পরিমাণে  স্যাভলন বা ডেটল মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে ক্ষতস্থান জীবাণুর সংক্রমণ হতে রক্ষা পাবে। মনে রাখবেন, পানি বেশি গরম হলে ব্যথা বাড়তে পারে

আরও পড়ুনঃ ওজন বাড়ানোর ১০ টি ঘরোয়া উপায়  

অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করুনঃ   ক্ষতস্থান পরিস্কার করা হয়ে গেলে ব্যান্ডেজ করার পূর্বে  অ্যান্টিসেপ্টিক ব্যবহার করুন। এটি সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। কোনোভাবেই অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না। বেশি ব্যবহার করলে ত্বকের সমস্যাসহ আরও অন্য সমস্যা হওয়ার ঝুকি থাকে। কিছু কার্যকরী অ্যান্টিসেপটিক। 

ব্যান্ডেজ দিনঃ যদি রক্তপাত হয় বা কাটা জায়গা খোলা রাখা নিরাপদ না হয়, তাহলে ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে রাখুন। ব্যান্ডেজ করার সময় খুব বেশি চাপ দেওয়া যাবে না যাতে রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার খুব বেশি ঢিলা ও রাখা যাবেনা এতে ব্যান্ডেজটি ক্ষত স্থান থেকে সরে যেতে পারে।ব্যান্ডেজ এর জন্য পরিষ্কার গজ ব্যবহার করুন। আগে ব্যবহার করা এমন গজ কাপড় ভুলেও ব্যবহার করবেন না। প্রতিদিন ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করা জরুরী। 

কার্যকরী কিছু অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম এবং সলিউশন

ক্ষত স্থান অনেকটা গভীর হলে অথবা ঠিক কি দিয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে জানা না থাকলে ব্যান্ডেজ  এর পূর্বে অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন নামের অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা সলিউশন কিনতে পাওয়া যায়। তার মধ্য থেকে কয়েকটি কার্যকরী অ্যান্টিসেপটিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

বিটাডাইন সলিউশনঃ  এটি ক্ষতস্থানের জন্য জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ছোটো খাটো কাটা ছেড়া বা ক্ষত স্থানের প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। এটিতে 10% Providone-Iodine থাকে যা সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকরী। বর্তমানে ১০০ মিলি সলিউশন এর বাজার মুল্য ১২০ টাকা এর কাছাকাছি। 

স্যাভ্লন অ্যান্টিসেপটিক লিকুইডঃ স্যাভ্লন লিকুইড এর সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। ক্ষতস্থান পরিস্কার করতে জীবাণু নাশক হিসেবে স্যাভ্লন লিকুইড ব্যবহার করা হয়। এর প্রধান উপাদান Chlorhexidine এবং Cetrimide. ১১২ মিলি বোতলের বর্তমান বাজার মুল্য ৬০ টাকা এর কাছাকাছি। সময়ের সাথে মুল্য পরিবর্তন হতে পারে। 

হেক্সিসল অ্যান্টিসেপটিক সলিউশনঃ হেক্সিসল আরও একটি কার্যকরী অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড। ক্ষত স্থান পরিস্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে এটি ব্যবহার করা হয়। হেক্সিসল হ্যান্ড রাব হিসেবেও পাওয়া যায়। এটিতে প্রধান উপাদান হিসেবে থাকে Chlorhexidine। হেক্সিসল হ্যান্ড রাব ৫০ মিলি বোতলের বর্তমান মুল্য ৫৫ টাকা এর কাছাকাছি। 

উল্লেখিত অ্যান্টিসেপটিক ছাড়াও আরও অনেক ধরনের অ্যান্টিসেপটিক রয়েছে যেগুলো আপনি কাটা ছেড়ার প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। কখনই অতিরিক্ত ব্যবহার করবেন না। এতে ক্ষতস্থান এবং আশেপাশের স্কিন এর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। সম্ভব হলে চিকিৎসক বা অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নেওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ। 

কয়েকটি কার্যকরী এন্টিবায়োটিক ওষুধ 

প্রিয় পাঠক চলুন কিছু কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে জেনে নেই। সাধারণ কাটা ছেড়ার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারলে এন্টিবায়োটিক ওষুধের প্রয়োজন পড়ে না। তবে কোন কারনে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হলে, ক্ষতস্থানে ঘা, পুজ সৃষ্টি হলে এবং অতিরিক্ত ব্যাথা হলে সেক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যাবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে মনে রাখতে হবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন করা অথবা ব্যবহার করা যাবে না। এতে মারাত্মক জটিল সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। শুধুমাত্র জানার স্বার্থে নিচে কয়েকটি     ওষুধের কাজ ও বর্তমান বাজার মুল্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

নিওমাইসিন সালফেট + ব্যাসিট্রাসিন জিঙ্ক + পলিমিক্সিন বি সালফেটঃ এটি একটি ওয়েন্টমেন্ট  জাতীয় ওষুধ যা ত্বকের ক্ষত, পোড়া ইত্যাদির সংক্রমণে ব্যাবহার করা হয়। এছাড়া ত্বকের বিভিন্ন রোগ যেমন- স্ক্যাবিস, টিনাপেডিস, ফিউরাংকল্স‌ এবং অ্যালার্জিক ডার্মাটাইটিসেও এই ওয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করা হয়।পলিমিক্সিন বি সালফেট এর সাথে নিওমাইসিন ও ব্যাসিস্ট্রাসিন জিঙ্ক-এর সংমিশ্রণে তৈরি এই ওয়েন্টমেন্ট যা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালীন এই ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। কোম্পানিভেদে ১০ গ্রাম টিউবের মুল্য ১৫ থেকে ৫০ টাকা হতে পারে।

মিউপিরোসিনঃ যদি কোন কারনে ক্ষতস্থানে সংক্রমণ ঘটে, ঘা হয় অর্থাৎ চর্মরোগের মতো জটিলতার সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে মিউপিরোসিন ওয়েন্টমেন্ট ব্যাবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে স্ট্যাফাইলোকক্কাস এবং স্ট্রেপটোকক্কাস জাতীয় ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হলে এটি ব্যবহার করা হয়। মিউপিরোসিন হলো এমন একটি এন্টিবায়োটিক যা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি করা যায়। সিউডোমোনাস ফ্লুরেসেন্স নামক এক ধরনের জীবাণু হতে গাজন প্রক্রিয়ায় এটি প্রস্তুত করা হয়। ১০ গ্রাম মিউপিরোসিন জাতীয় ওয়েন্টমেন্ট এর বাজার মুল্য ১৪০ থেকে ২০০ টাকা হতে পারে। 

ফুসিডিক এসিড ক্রিমঃ কাটা জায়গা কোন কারনে সংক্রমিত হলে অথবা ঘা সৃষ্টি হলে দ্রুত শুকানোর জন্য এই ক্রিমটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া একজিমা, পোড়া ক্ষত এবং বিভিন্ন ধরনের ডার্মাটাইটিস  এ এই ওষুধ টি প্রেস্ক্রাইব করা হয়ে থাকে। প্রতিদিন ২ বার করে আক্রান্ত স্থানে আলতোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে। ৩ বছরের নিচে বাচ্চাদের জন্য এই ক্রিমটি প্রযোজ্য নয়। ১৫মিলি টিউব এর বর্তমান মুল্য ৯০ টাকা এর কাছাকাছি।

যা করা একদম উচিত নয়

অনেক সময় আমাদের কিছু ছোটো ছোটো ভুল অথবা অসাবধানতা আমাদের জীবনে বড় ধরনের দুর্ভোগ ডেকে আনে। শরীরের কোথাও কেটে গেলে অনেকে আছে সেটাকে অবহেলা করে, আবার অনেকে আছে ভীত হয়ে বা ভুল পরামর্শে বিপদজনক কাজ করে ফেলে। যা কাটা জায়গায় সংক্রমণ এর সৃষ্টি করে। অনেক সময় ভুল চিকিৎসার কারনে শরীরের কোন একটি অঙ্গও হারিয়ে ফেলতে হয়। তাই নিচে উল্লেখিত কাজগুলো কখনো করবেন না, অন্যকে করতে দিবেন না।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের ঘরোয়া উপায় জেনে নিন   

কাটা জায়গায় রক্তপাত বন্ধ করার জন্য আমরা অনেকসময় মাটি, ছাই, হলুদ, টুথপেস্ট ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি। জেনে রাখা ভালো রক্তপাত বন্ধ করতে এগুলোর তেমন কোন ভুমিকা নেই। বরঞ্চ সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। মাটিতে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে, যেগুলো ক্ষতস্থান দিয়ে প্রবেশ করে বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। আবার অনেকসময় হাতের কাছে থাকা অপরিস্কার কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান এ ব্যান্ডেজ করি। এই কাজটিও পরিহার করা জরুরী। এছাড়া নিজের ইচ্ছামতো এন্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করা যাবেনা। প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শে টিটেনাসের ভ্যাক্সিন গ্রহণ করতে হবে।

কখন ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন

সাধারণ কাটাছেড়ার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত প্রাথমিক চিকিৎসাগুলো গ্রহণ করলেই যথেষ্ট। তবে ক্ষত এর মাত্রা এবং ধরন বিবেচনা করে অনেকসময় রোগীকে ডাক্তারের সরনাপন্ন হতে হয়  সময়বিশেষ হাসপাতালে ভর্তি করার ও প্রয়োজন হতে পারে। তাই আমাদের জেনে রাখা জরুরী ঠিক কি পরিমাণ, কতটুকু কাটলে আমাদের ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। নিচের লক্ষণগুলো থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। 
কাটা যদি অনেক গভীর হয় অর্থাৎ মাংস বা হাড় দেখা যায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। ডাক্তার প্রয়োজন হলে সেলাই করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এছাড়া যদি ১০ মিনিটের অধিক সময় ধরে রক্তপাত হয় এবং বন্ধ না হয়, কাটা জায়গা ফুলে যাওয়া, পুজ জমা, মরিচা ধরা কোন কিছুতে কাটলে, টিটেনাস টিকা নিয়েছেন কিনা মনে না থাকলে রোগীকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ  করতে হবে। 

 টিটানাস ইনজেকশন কবে লাগবে

টিটেনাস হলো একধরনের সংক্রামক রোগ যার কারনে দেহের পেশিতে অনমনীয়তা দেখা দেয়, সাথে প্রচণ্ড খিচুনি হয়। এ ধরনের রোগে বিশেষ করে চোয়াল এবং ঘাড় এর পেশি গুলো আক্রান্ত হয়। শরীরের একদিকের পেশি গুলো সংকুচিত হয় বলে শরীর বেকে ধনুকের আকার ধারন করে, তাই টিটেনাসকে ধনুষ্টংকার ও বলা হয়ে থাকে। সাধারনত ক্ষতস্থানের মাধ্যমে এই রোগের ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করে। এছাড়া ধূলিকণা পশুপাখির মল থেকেও এই ব্যাকটেরিয়া বিস্তার লাভ করতে পারে।

টিটেনাস এর ব্যাকটেরিয়ার নাম ক্লোস্ট্রিডিয়াম টিটানি। এগুলো সাধারনত পচা মাটিতে অথবা মরিচা ধরা ধাতব বস্তুতে বসবাস করে। পুরনো মরিচা ধরা অপরিস্কার ধাতব কোন কিছুতে ক্ষত সৃষ্টি হলে ওই ক্ষতস্থান দিয়ে ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে রক্তস্রতের সাথে মিশে পুরো শরীরে ছড়িয়ে যায় এবং রোগ সৃষ্টি করে। টিটেনাস থেকে বাঁচার জন্য টিটেনাসের টিকা প্রদান করা হয়। পাঁচ বছর পর পর এই টিকা গ্রহণ করতে হয়। তাই যদি মরিচা ধরা কোন ধাতব বস্তুতে কেটে থাকে অথবা ঠিক কিসে কেটেছে টা বুঝতে না পারলে এবং টিটেনাস টিকা কবে নিয়েছেন মনে না থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী টিটেনাস এর টিকা গ্রহণ করতে হবে।  

ফার্স্ট এইড বক্স বানানোর নিয়ম

বাসাবাড়িতে কাজ করার সময় কাটাছেড়া বা আগুনে পোড়া এই ধরনের সমস্যা প্রায়ই ঘটে থাকে। এর এগুলা থেকে বাঁচার জন্য প্রথম হাতিয়ার হলো প্রাথমিক চিকিৎসা। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য বাড়িতে ফার্স্ট এইড বক্স রাখতে হবে। চলুন জেনে নেই কিভাবে একটি ফার্স্ট এইড বক্স বানাবেন এবং কি কি রাখবেন।

প্রথমে একটি মাঝারি বক্স  নির্বাচন  করুন। বক্সের মধ্যে ড্রেসিং এর জন্য রাখুন অ্যান্টিসেপটিক লোশন (স্যাভলন, ডেটল), অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম (ব্যাকট্রিম, ফুসিডিন), গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা, কাচি, টেপ, জীবাণুনাশক হ্যান্ড স্যানিটাইজার। এছাড়া রাখতে পারেন কিছু ওষুধ যেমন প্যারাসিটামল, এন্টাসিড, ওমিপ্রাজল, ওআরএস প্যাকেট ইত্যাদি।

শেষকথাঃ কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর এন্টিবায়োটিক

ইতিমধ্যে কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর এন্টিবায়োটিক ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। তবে  শুধু সঠিক নিয়মে প্রথমিক চিকিৎসা নিলেই ইনফেকশন, ব্যথা বা জটিলতা এড়ানো যায়। অসাবধানতাবশত বা অন্য কোনো কারনে সংক্রমণ বা এধরনের কোন জটিলতা সৃষ্টি হলে চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করতে হতে পারে।সেরকম কয়েকটি কার্যকরী ও বহুল ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক ওষুধ সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে যা কাটা জায়গা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে। আপনার হাতের কাছে যদি প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয়  কিট থাকে,  শুরুতেই প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

তাই হঠাৎ কোথাও কেটে গেলে আতঙ্কিত হবেন না উল্লেখিত প্রাথমিক চিকিৎসা সমূহ ধাপে ধাপে গ্রহণ করুন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করবেন না। কাটা ছেড়া ছাড়াও অন্য প্রয়োজনে বাড়িতে ফার্স্ট এইড বক্স রাখুন। সঠিক প্রাথমিক চিকিৎসা যেকোনো জটিল সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দিতে পারে। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা কে অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। 

আরও পড়ুনঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর গোপন টিপস

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মেডিজেনিক এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url