রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার বিস্তারিত আলোচনা

আপনি কি রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন?  তাহলে এই সম্পূর্ণ পোস্টটি আপনার জন্য। আজকের পোস্টে রিকেটস রোগ কি, কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।  এছাড়া রিকেটস এর জটিলতা সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। 
রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

জীবনঘাতী রিকেটস রোগের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। রিকেটস সম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকলে এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যেতে পারে। 

পেজ সুচিপত্রঃ রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে সকল বাবা মায়ের জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। রিকেটস কোন সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা নয় এটি হলো এমন একটি প্রতিবন্ধকতা যা আপনার শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। সাধারণত যে সময়টিতে একটি শিশু বেড়ে উঠতে শুরু করে তখন থেকেই এই রিকেট রোগ শিশুর শরীরে জন্মাতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে বাবা মায়েরা বুঝতে পারে না কেন তার শিশুর বৃদ্ধি কমে গেছে আর তার পরিপূর্ণ বৃদ্ধি হচ্ছে না। তারা এটিকে সাধারণ সমস্যা ভেবে অবহেলা করে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন জটিল সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

রিকেটস রোগ একটি হাড়ের সমস্যা এতে হাড়ের সম্পূর্ণ বিকাশ সম্ভব হয় না। তাই শিশুর বৃদ্ধি রহিত হয় এবং স্বাভাবিকের তুলনায় শরীরের উচ্চতা অনেক কম হয়। তবে আশার কথা হলো রিকেটস রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে সময়মতো রোগ নির্ণয় করা জরুরি। তাই রিকেটস রোগের ক্ষেত্রে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিকার হিসেবে কি কি করতে হবে তা জানা থাকলে এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হয়ে উঠবে। 

রিকেটস রোগ কি

রিকেটস হলো একটি অস্থির  সমস্যা যেখানে শিশুর হাড়ের সঠিক গ্রোথ হয় না। তাই বয়স বাড়তে থাকলেও শিশুর উচ্চতা স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকে এবং অস্বাভাবিক গ্রোথ দেখা দেয়। এটিকে ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ ও বলা যায় কারণ ভিটামিন ডি এর অভাবে সাধারণত রিকেটস  রোগ হয়ে থাকে। ভিটামিন ডি শরীরের ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়ামের অনুপাত স্বাভাবিক রাখে। হাড়ের গঠনে ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভূমিকা সবথেকে বেশি।
আমরা যদি কোন ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খায় তা থেকে ক্যালসিয়াম শোষণের মাত্রা ভিটামিন ডি বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। রিকেটস রোগ সাধারণত শিশুদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে যখন তাদের হাড়ের বৃদ্ধি পেতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে রিকেটস  রোগ পরিবারের লোকজন বুঝতে পারে না। তাই সঠিক সময় চিকিৎসার অভাবে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই রোগ হলে তাকে বলে অস্টিওম্যালেশিয়া। 

রিকেটস রোগের কারণ

আমরা যে খাদ্য খাই পরিপাকের পরে তা অন্ত্রে গিয়ে পৌঁছায়। সেখানে ক্যালসিয়াম শোষণে ভিটামিন ডি প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনার সন্তানের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিলে ক্যালসিয়াম শোষণও কমে যাবে এবং রিকেটস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। এখন শরীরে ভিটামিন ডি কমে যাওয়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ নিচে আলোচনা করা হলোঃ
 
সূর্যালোকের অভাবঃ শিশুর শরীর যখন সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসে তখন শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। কারণ মানুষের শরীরের ত্বক সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ভিটামিন ডি সংশ্লেষ করতে পারে।আপনার শিশু যদি পর্যাপ্ত সূর্যের আলোতে আসার সুযোগ না পায় বিশেষ করে শহরে বেড়ে ওঠা শিশুদের ক্ষেত্রে তাহলে শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে ক্যালসিয়ামের পরিমাণও কমে যায় এবং অস্থির গঠন সঠিকভাবে হয় না।

খাদ্যের অভাবঃ কিছু কিছু খাদ্য রয়েছে যাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যেমন চর্বিযুক্ত মাছ, মাছের তেল, ডিম ইত্যাদি ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করে থাকে। এই ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের ঘাটতি সৃষ্টি হলে শরীরে ভিটামিন ডি কমে যায় এবং রিকেটস এর মতো ভয়াবহ অস্থির সমস্যা সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। দারিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের ক্ষেত্রে খাদ্যের অভাবে রিকেটস রোগ হতে পারে। 

রিকেটস রোগের লক্ষণসমূহ

সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রিকেটস রোগ কে নিরাময় করা যায়। তবে এক্ষেত্রে সঠিক সময় রোগ নির্ণয় করা জরুরী। আপনি যদি বুঝতে না পারেন আপনার শিশু রিগেটস রোগে আক্রান্ত তাহলে এই রোগটি ধীরে ধীরে শিশুর শরীরে বৃদ্ধিকে ব্যাহত করবে। তাই রিকেটস রোগের লক্ষণগুলো জানা থাকলে আপনার শিশুর রিকেটস হয়েছে কিনা তা বুঝতে পারবেন এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে যেতে পারবেন। রিকেটস রোগ হলে শিশুর শরীরে যে লক্ষণগুলো প্রধানত দেখা যায় সেগুলো হল-

যেহেতু ক্যালসিয়ামের অভাব সৃষ্টি হয় তাই শিশুর বৃদ্ধি স্বাভাবিকের তুলনায় খুবই কম হয়।মেরুদন্ড, পা, পেলভিস বা শ্রেণীতে ব্যথা হতে পারে। রিকেটস  এর ফলে শিশুর হাড়ের যে ক্রমবর্ধমান প্রান্ত থাকে তা নরম হয়ে যায়। শিশু স্বাভাবিকভাবে বসতে এবং হাঁটাচলা করতে পারেনা। বেশি দুর্বল হতে শুরু করে। পায়ের হাড়গুলা ধনুকের মতো বাঁকা হতে দেখা যায়। দাঁত এবং হাড়গুলো ভঙ্গুর প্রকৃতির হয় ফলে হালকা আঘাত বা চাপে ভেঙে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। মাড়ির গঠন ঠিকমতো হয় না যার কারণে শিশু চিবিয়ে খাবার খেতে পারে না। 

রিকেটস হওয়ার জন্য উপরে উল্লেখিত সবগুলো লক্ষণ থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। আবার শুধু যে রিকেটসের ক্ষেত্রেই এই লক্ষণগুলো দেখা যাবে তারও নিশ্চয়তা নেই। তাই এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তার রোগ নির্ণয় করে প্রয়োজনমতো চিকিৎসা প্রদান করবেন। তাই রিকেটস এর লক্ষণ গুলো জেনে রাখা জরুরি। 

রিকেটস  এর ঝুঁকি কাদের  বেশি

সাধারণত নবজাতক শিশুদের ক্ষেত্রে রিকেটস  রোগ হওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিশেষ করে যে সকল শিশুরা মায়ের বুকের দুধ পান করে থাকে। মায়ের শরীরের পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না থাকলে শিশুর শরীরেও ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয় ফলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি সৃষ্টি হয় যা রিকেটস রোগের প্রধান কারণ। অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের আগে শিশু জন্মগ্রহণ করলে তার রিকেট রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

যে সকল শিশুরা পর্যাপ্ত সূর্যালোকের সংস্পর্শ পায় না তাদের ক্ষেত্রে রিকেটস  রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে শীতকালে যখন ঘরের জানালা দরজা বন্ধ করা থাকে তখন সূর্যের আলো ঘরে প্রবেশ করতে পারে না। আবার মোটা কাপড় চোপড় পরিধান করার কারণে শিশুর ত্বক সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসতে পারে না। তাই শরীরে ভিটামিন ডি সংশ্লেষণ কমে যায় এবং রিকেটস  হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। 

শহরের বাসা-বাড়িতে বড় হওয়া শিশুদের ক্ষেত্রে রিকেটস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই ধরনের শিশুরা সূর্যের আলো সংস্পর্শে আসার সুযোগ খুব একটা পায় না। তাই ভিটামিন ডি এর ঘাটতি সৃষ্টি হতে পারে। আবার দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের ক্ষেত্রেও রিকেটস এর ঝুকি রয়েছে। কারণ তারা পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারে না ফলে ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে।

আবার শিশুর শরীর যদি অতিরিক্ত কালো হয় সে ক্ষেত্রেও ঝুকি বেশি থাকে। ত্বক কালো হওয়ার প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত মেলানিন নামক পিগমেন্ট এর উপস্থিতি । ত্বক বেশি কালো হওয়ার কারণে সূর্যের আলো ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না এবং ভিটামিন ডি সংশ্লেষণ ঠিকমতো হয় না। এছাড়া বিভিন্ন জিনগত এবং বংশগত সমস্যার কারণেও রিকেট রোগ হতে পারে। 

রিকেটস রোগের পরবর্তী জটিলতা

শিশু অবস্থায় রিকেট রোগের নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসা দেওয়া না হলে পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। রোগের কারণে জটিলতা নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • স্থায়ীভাবে হাড়ের বিকৃতি
  • পা ও মেরুদন্ড ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে যায়
  • অস্থি দুর্বল হওয়ায় হালকা আঘাতে ভেঙে যেতে পারে
  • যেহেতু অস্তিতে ব্যথা থাকে তাই দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়
  • পাজরের অস্থিগুলো বাইরের দিকে বেরিয়ে আসে
উল্লেখিত জটিলতা ছাড়াও শ্বাসনালীর প্রদাহ, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, আইরন ডেফিসিয়েন্সি রক্তস্বল্পতা ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। 

কিভাবে রিকেটস রোগ নির্ণয় করবেন

রিকেটস  থেকে নিরাময়ের জন্য সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা জরুরী। আপনার সন্তানের শরীরে উল্লেখিত লক্ষণগুলোর কমপক্ষে দুই থেকে তিনটি যদি লক্ষণীয় হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে নিচে উল্লেখিত কয়েকটি পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার সন্তানের রিকেটস রোগ হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

টেস্ট টেস্টের বর্ণনা
শারীরিক পরীক্ষা
চিকিৎসক হাড়ের বৃদ্ধির হার, অস্বাভাবিক বিকৃতি ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করেন
এক্স-রে
হাড়ের কোথাও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়েছে কিনা অথবা বিক্রি করছে কিনা তা এক্স এর মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়
রক্ত পরীক্ষা
রক্তে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, ফসফেট ইত্যাদির মাত্রা পরীক্ষা করা হয় 
প্রস্রাব পরীক্ষা
প্রসাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত ফসফেট অথবা ক্যালসিয়াম নির্গত হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়
হাড়ের বায়োপসি
এক্ষেত্রে এক টুকরা হার নিয়ে তার গঠন বিস্তারিত পরীক্ষা করা হয়
জেনেটিক টেস্ট
রিকেটস রোগটি বংশগত কিনা তা নির্ণয়ের জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হয়

রিকেটস রোগের প্রতিকার বা চিকিৎসা

রিকেটস হল একটি শতভাগ নিরাময়যোগ্য  অসুখ, বিশেষ করে যদি তা শিশু অবস্থায় বুঝতে পারা যায় এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের থেকে চিকিৎসা নেওয়া যায়। রিকেটস  রোগের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার সাহেব অবস্থা বুঝে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন। আপনার সন্তানকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মত চলতে হবে। চিকিৎসা বা প্রতিকারের কয়েকটি উপায় নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনঃ রিকেটস হয় সাধারণত ভিটামিন ডি এর অভাবে যার কারণে শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট এর পরিমাণও কমে যায়। তাই খাবারের মাধ্যমে যদি ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম ফসফেট এর পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায় তাহলে রিকেটস  থেকে মুক্তির সম্ভাবনা মিলে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট সমৃদ্ধ কয়েকটি খাবার হলো চর্বিযুক্ত মাছ যাতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডও থাকে, ডিম, দুধ, পনির, দই এবং কিছু শক্তিশালী সেরিয়াল।
সূর্যালোকের সংস্পর্শঃ যেহেতু সূর্যালোকের সংস্পর্শে ত্বক ভিটামিন ডি সংশ্লেষ করে তাই রিকেটস রোগের প্রতিকারের জন্য প্রতিদিন অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট শিশুকে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আনতে হবে। এতে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে একই সাথে ক্যালসিয়াম এবং ফসফেটের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। তবে অতিরিক্ত সময় ধরে সূর্যের আলোতে রাখলে ক্ষতিকর বেগুনি রাশির প্রভাবে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণঃ রিকেটস এর কারণে যদি ভিটামিন ডি এর পরিমাণ অত্যাধিক কমে যায় সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট প্রয়োগ করে ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করা হয়।তবে এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এবং নির্দেশিত পরিমাণ সাপ্লিমেন্ট শিশুকে খাওয়াতে হবে।কেননা অতিরিক্ত ভিটামিন ডি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায়। খাবারের সাথে এবং ইনজেকশনের মাধ্যমে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যায়। 

সার্জারিঃ রিকেটস রোগের প্রভাবে অস্থির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হতে পারে অনেক ক্ষেত্রে একটি অস্থি অন্য অস্থির সাথে মিলিত হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে অস্থিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চিকিৎসক সার্জারির ব্যবস্থা করেন। তবে এটি একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা। সঠিক সময়ে রিকেটস রোগ নির্ণয় করতে পারলে সার্জারি ছাড়াও পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। 

রিকেটস প্রতিরোধের উপায়

প্রতিরোধ বলতে বোঝায় এমন ব্যবস্থা গ্রহণ যার ফলে ঐ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।রিকেটস রোগ হওয়ার আগে আমরা যদি রিকেটস এর প্রতিরোধের উপায় গুলো জেনে থাকি তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিশুকে রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে পারি। তাই প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করা অধিক জরুরী।

রিকেটস প্রতিরোধের জন্য শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট এর মাত্রা বজায় রাখতে হবে। এজন্য ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার শিশুকে গ্রহণ করাতে হবে। যে সকল শিশু মায়ের বুকের দুধ পান করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে মাকে ভিটামিন ডি গ্রহণ করতে হবে। শিশুকে নিয়মিত 10 থেকে 15 মিনিট সূর্যের আলো সংস্পর্শে আনতে হবে। রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে পরিবারের সকলকে সচেতন হতে হবে। 

রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার-শেষকথা 

রিকেটস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা না থাকলে আপনার সন্তানের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল, মধ্যম আয়ের দেশে রিকেটস রোগের প্রাদুর্ভাব অনেক বেশি। পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাব আবার বিলাসবহুল চার দেয়ালের মধ্যে বেড়ে ওঠার জন্য শিশুরা অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয়।

রিকেটস রোগ যেহেতু একটি নিরাময় যোগ্য রোগ তাই এই রোগে আক্রান্ত হলে ভয় না পেয়ে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করতে হবে। যাতে আপনার শিশু রিকেটসে আক্রান্ত না হয় সেজন্য উল্লেখিত প্রতিরোধের উপায় সমূহ অনুসরণ করতে হবে। রিকেটস রোগ সম্পর্কে যে কোন ধরনের জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্টে বলতে পারেন, ইনশাআল্লাহ যথাসম্ভব উত্তর দেওয়া হবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মেডিজেনিক এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url